বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামের নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত আছে। গত একমাসের বেশি সময় ধরেই দাম কমছে মূল্যবান এই ধাতুর। এর ফলে বিশ্ববাজারে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে বিক্রি হচ্ছে স্বর্ণ । যার প্রভাব পরিলক্ষিত হওয়া শুরু করেছে দেশের বাজারেও। ক্রমাগত দাম কমে ২০২০ সালের এপ্রিলের পর এখন আবার প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম সাড়ে ১৬০০ ডলারের নিচে নেমে গেছে।
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমা শুরু হয় আগস্টের মাঝামাঝি সময় থেকে। ওই মাসের ১২ তারিখ প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিলো ১ হাজার ৮০১ দশমিক ৮২ ডলার। সেখান থেকে কমে এখন ১ হাজার ৬৪৩ দশমিক ২৬ ডলারে বিক্রি হচ্ছে প্রতি আউন্স স্বর্ণ।
তবে বিশ্ববাজারের এই দরপতন তেমন একটা প্রভাবিত করতে পারেনি দেশের স্বর্ণের বাজারকে। বিশ্ব বাজারে যেখানে দাম কমেই চলছে, সেখানে চলতি মাসের শুরুতেই স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়, যা দেশের বাজারের আগের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলে। এ সময় সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১.৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ১ হাজার ২৮৩ টাকা বাড়িয়ে ৮৪ হাজার ৫৬৪ টাকা করা হয়। এর আগে দেশের বাজারে স্বর্ণের এতো দাম আর দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন- বিশ্ববাজারে দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন দামে স্বর্ণ
তবে সম্প্রতি দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমানো হয়েছে দুই দফায়। চলতি মাসের ১৪ সেপ্টেম্বর সোনার দাম কমিয়েছিলো বাজুস যা ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হয়। ওই দরে ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেচাকেনা হয় সোনা। এই দফায় ভালো মানের স্বর্ণের দাম ছিলো ৮৩ হাজার ২৮১ টাকা, ২১ ক্যারেট প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৭৯ হাজার ৪৯০ টাকা, ১৮ ক্যারেটের স্বর্ণ বিক্রি হয়েছে ৬৮ হাজার ১১৮ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ছিলো ৫৬ হাজার ৪৫৪ টাকা।
এর চার দিন পর ১৮ সেপ্টেম্বর স্বর্ণের দাম আবারও কমানো হয়। সে সময় দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে কমানো হয় ৯৩৩ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম নেমে আসে ৮২ হাজার ৩৪৮ টাকায়।
তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বিশ্ববাজারে ক্রমাগত বাড়তে থাকে স্বর্ণের দাম। মার্চের প্রথমার্ধেই প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দুই হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। এরপর গত কয়েক মাসে কয়েক দফা ওঠা-নামা করে স্বর্ণের দাম। তবে আগস্টের মাঝামাঝি স্বর্ণের দরপতন শুরু হয়।
এদিকে স্বর্ণের পাশাপাশি রুপা এবং প্লাটিনামের বাজারমূল্যও নিম্নমুখী। গত এক সপ্তাহে রুপার দাম ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ কমে প্রতি আউন্সের দাম ১৮ দশমিক ৮৫ ডলারে নেমেছে। প্লাটিনামের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে ৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ। এতে প্রতি আউন্স প্লাটিনামের দাম দাঁড়িয়েছে ৮৫৪ ডলার।