বিজ্ঞানীরা সূর্যপৃষ্ঠে রহস্যময় এক এলাকার সন্ধান পেলেন । সেখানে গেলেই আশ্চর্যজনকভাবে কমে আসে তাপমাত্রা। এই তথ্য সংগ্রহ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের শক্তিশালী একটি সোলার টেলিস্কোপ।
বিজ্ঞানীরা জানান, সূর্যপৃষ্ঠ থেকে ৪০০ কিলোমিটার উঁচুতে রহস্যে ঘেরা এই অঞ্চলটির নাম ক্রোমোস্ফিয়ার। এটি সৌর পরিমণ্ডলের একটি স্তর। এই স্তরের সর্বোচ্চ সীমা ১২০০ কিলোমিটার উচ্চতায়। ক্রোমোস্ফিয়ারের মধ্যে স্থানভেদে তাপমাত্রার ভিন্নতা রয়েছে। সাধারণত সূর্যের উপরের দিকের তাপমাত্রা থাকে সাত হাজার ৭০০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। আর ক্রোমোস্ফিয়ারের নীচের দিকে তাপমাত্রা থাকে তিন হাজার ৭০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই স্তরের একটি বিশেষত্ব খুঁজে পেয়েছেন। সূর্যের এই বিশেষ স্তরটি থেকে দূরে সরে গেলে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। যেখানে সূর্যের অন্যান্য স্তরগুলির ক্ষেত্রে দূরে সরে গেলে তুলনামূলকভাবে তাপমাত্রা কমে। সে সব স্তর থেকে সূর্যের কেন্দ্রের আরও কাছে গেলে তাপমাত্রা বাড়ে। যেহেতু সূর্যকেন্দ্রকেই সৌরজগতের সবচেয়ে উষ্ণ বলে ধরা হয়, তাই ক্রোমোস্ফিয়ারে তাপমাত্রা হ্রাস-বৃদ্ধির এই তারতম্য মহাকাশ গবেষকদের ভাবিয়ে তুলেছে।
বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সৌর টেলিস্কোপ হিসাবে দাবি করা হয় এনএসও-র ‘দ্য ড্যানিয়েল কে. ইনোউয়ে সোলার টেলিস্কোপ’-কে। নানা সময়ে সূর্যপৃষ্ঠের নানা তথ্য বা অজানা ঘটনা এই টেলিস্কোপের মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন। সেই টেলিস্কোপই সূর্যপৃষ্ঠে ক্রোমোস্ফিয়ারের রহস্যময় এই এলাকার খোঁজ দিয়েছে।
এনএসও-র সৌর টেলিস্কোপের মূল লক্ষ্য সূর্যের মধ্যেকার অজানা ঘটনাবলী প্রকাশ্যে আনা ও নক্ষত্রের অজানা দিক পৃথিবীর মানুষকে চেনানো। সংস্থার ডিরেক্টর সেতুরামন পঞ্চানাথন বলেন, ‘‘দ্য ড্যানিয়েল কে. ইনোউয়ে সোলার টেলিস্কোপ বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সৌর টেলিস্কোপ। আমরা সূর্যকে যে ভাবে চিনি, তার সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত যা জানি, সে ধারণা বদলে দিতে পারে এই টেলিস্কোপ।’’ সৌরঝড়, সূর্য থেকে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের মতো ঘটনাগুলিকে আরও ভাল ভাবে বুঝতে সাহায্য করবে এই সোলার টেলিস্কোপ, দাবি বিজ্ঞানীদের।